Posts

#৫ - যথার্থ ঈশ্বর সেবা

     না, এ কথা ঠিকই যে বেশ কিছু দিন সেরকম উল্লেখযোগ্য স্বপ্ন আমি দেখিনি যা আমার মনে গভীর দাগ কেটে গেছে। তার জন্যে হয়তো বা আমার সাম্প্রতিক কালের উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন কে ( নানাবিধ কারণে বিনিদ্র রজনী কাটানো গোছের ব্যাপারস্যাপার ) খানিকটা হলেও দায়ী করা যেতে পারে।      মাঝখানে এক দিন খালি দেখলাম যে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সিনিয়ার আমায় ফোন করে তার একের পর এক কেচ্ছার ফিরিস্তি দিতে লেগেছে; তারপর সেই কনফেরেন্স কল-এ তার এখনকার বান্ধবীও (যদিও তাকে আমি চিনিনা; মানে কে তা জানিই না; জানার প্রয়োজনও বোধ করি না) এসে জুটলো, এবং তারা দুজনে মিলে আমায় গাল-মন্দ করতে থাকলো কেচ্ছায় জড়িয়ে না পড়ার জন্যে। আমি আমতা-আমতা করে বলছিলাম যে প্রেম ছাড়া কেচ্ছা সম্ভব না, আর তাছাড়াও আজকাল তো মুখে মাস্ক পরে বেরোচ্ছে সবাই, তাই কারুরি মুখও দর্শন করতে পারছি না, অতয়েব প্রেম করা বা প্রেমে পড়া কী করেই বা সম্ভব, এমন সময় একটা অদৃশ্য বেড়াল ("দ্য ইনভিজিবল ম্যান"-এর ধাঁচেই), যে কী না অনেকক্ষণ একটা তোয়ালের তলায় লুকিয়ে রেখে ছিল নিজেকে, সে আমার হাঁটুর উপর লাফিয়ে ঝুলে পড়ে আমার ঘুম ঘেঁটে একশা করে দিল।      কিন্তু যেটা বিগত কয়েক দিন

#৪ - জাতীয় সঙ্গীত, জিষ্ণুর অন্তর্ধান ও আম-কাসুন্দি

     OBS-এ চাকরি করে যাচ্ছিলাম মন দিয়েই। বাধ সাধলো কোনও অজ্ঞাত কারণে ভয়ানক রকমের চিন্তিত এক মা। সে কীভাবে যেন আমার ফোনের নম্বর জোগাড় করে ক্রমাগত আমাকে ফোন করে আমাদের কর্ণধারের নম্বর চাইতে থাকে। সে নাকি কেবল ওনার থেকেই সকল বই ও তাদের বিভিন্ন এডিশন সম্বন্ধে জানতে চায়। আমিও নানান আছিলায় কথা ঘোরাতে থাকি, কারণ এ কথা জলের মতো পরিস্কার হয়ে যায় যে তার মূল উপলক্ষ বই নয় মোটেও, সে আসলে যেনতেনপ্রকারেণ কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে ভাব জমাতে চায়।      এরকমই এক দিন মহিলা ফোন করে কান ঝালাপালা করে দিচ্ছে; আমি ফোন কানে নিয়ে আপিসময় হেঁটে বেড়াতে বেড়াতে এই মহিলা কে বিরত করার নতুন ফন্দী-ফিকির আঁটছি, আর আমাদের আপিসের হেড সোনালি দি ওনার ঘরের মধ্যে থেকে আমার দিকে সন্দিহান দৃষ্টি হানছেন মাঝেমাঝে, এমন সময় দেখি কিনা আপিসের ভিতরে-বাইরে বেজায় ভিড় জড় হয়ে গেছে।       থকথকে ভিড়। তিল ধারণের জায়গা নেই বল্লেও কম বলা হয়; মাইক্রোস্কোপের তলায় মাছি মারতে থাকা এমনি চোখে ধরা দেবে না এমন ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবাণুও ওই ভিড়ের মধ্যে প্রবেশ করার আগে অনেকবার ডন-বৈঠক দিতে দিতে ভাল-মন্দ বিচার করবে। এদিকে রিপাব্লিক বা ইন্ডিপেনডেন্স ডে-র কো

#৩ - বলব কি ভাই, আজগুবি ছাই

     ভালই ছিলাম চাঁদনি চকের আপিসে। মন দিয়ে কাজ করার ফাঁকে ফাঁকে এ মোড় সে মোড় ঘুরে ঘুরে পেটের মধ্যে আমড়া, ঝালমুড়ি, কচুরি, সিঙ্গারা পাচার করছিলাম। হঠাৎ মা ফোন করে বলে কিনা LIC-র ক্যানটিনে ডিনারে যেতে হবে। কিছু অতিথি আসবেন নাকি।      মোক্ষম চালটি তখনও বুঝিনি। বুঝলাম কিছুক্ষণ পরে, যখন সায়ন দা এসে আমার টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চোখ টিপে টিপে বিশ্রী রকম হাঁসতে লাগল। ব্যাপারখানা এই; ওর কোন এক বিহারি আত্মীয়র মেয়ের সঙ্গে আমার বিয়ের প্রস্তাবনা চলছে। কন্যা মার্কিন মুলুকে জ্ঞান অর্জনে ব্যস্ত।      বিষয়টি বোধগম্য হতেই মা কে ফোন করে বকাবকি করার পাশাপাশি বুঝিয়ে-সুঝিয়েও বল্লাম (কতবারই তো বলেছি, তবু) কেন আমি কিছুতেই বিয়ে করব না। মা-র এই হেন কূট চাল বিফলে যাওয়ায় মা ভারি মুষড়ে পড়ল। কিন্তু ভেজা কাঠ ভাঙবে তবু মচকাবে না। তাই মা আমায় পালটা বল্লে এই ক্ষণে আমার কর্তব্য হচ্ছে সামান্য সৌজন্যটুকু বজায় রাখা। অগত্যা যেতেই হোলো ডিনারে।      গিয়েই নিজের ভাবনাচিন্তা খোলসা করে দিলাম সকলের সামনে আগেভাগেই। সায়ন দা-র বাবা-মাও অনেক বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজন সমেত LIC-র অন্য এক চেম্বারে খেতে এসে ছিলেন। আত্মীয়দের কি ব

#২ - কাফ্কা জানেন

     দিব্যি আমি আমার খাটে শুয়েই ঘুমচ্ছিলাম। নন্দিতা সাইড-এর আরেকটা উপরের খাটে শুয়ে ছিল। হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেল (Nolan কি এই meta স্বপ্নে খুশি হতেন? )। দেখি মুখের উপর মশারি উঠছে আর নামছে, একই সঙ্গে মশারির এক সাইড থেকে একটা মাকড়সাও জাল বুনে এবং বেয়ে ওঠা-নামা করে ভারি কসরত দেখাচ্ছে, এবং এই হেন চক্রান্তের পাণ্ডা জিষ্ণু joint বানাতে বানাতেই মশারির গতিবিধি পরিচালনা করছে এক ঠ্যাঙে।      তীব্র প্রতিবাদ করে মাকড়সা শুদ্ধু মশারিতে পদাঘাত করায় নন্দিতা আর জিষ্ণু বেমালুম হাঁসতে হাঁসতে হিজিবিজবিজের মতো গড়াগড়ি দিতে লাগল। হাসির দমক থামতে না থামতেই দেখি জিষ্ণু সেই দাদু-দিউ'এর পেল্লায় খাটের তলায় বাক্স-প্যাঁটরা সরাচ্ছে। মতলব টা কি জিজ্ঞেস করায় বলে কিনা লুকোচুরি খেলবে। কার সঙ্গে জিজ্ঞেস করায় দেখলাম নন্দিতা কোন ফাঁকে বেমালুম সমন্ত ্যকশোভন-এ পরিণত হয়েছে।      এই হেন বিভীষিকাময় পরিবর্তন চাক্ষুষ করার পরেও খানিক সাহস সঞ্চয় করে আবারও প্রতিবাদ করলাম। প্রমাদ গুনে জিজ্ঞেস করলাম এক ঘরে লুকোচুরি খেলা কীভাবে সম্ভব। তাতে জিষ্ণু আর সমন্ত ্যকশোভন সোডার মতো ভসভসিয়ে হাঁসতে হাঁসতে, হামাগুড়ি দিতে দিতে , মাথায় ঝুল আর মা

#১ - কেলেঙ্কারি

     কোনও এক ব্যক্তির সঙ্গে গড়িয়ার দিকে এক অচেনা stadium-এ খেলা দেখতে যাচ্ছিলাম। সেই ব্যক্তি কে ছিল মনে নেই, খালি মনে আছে তার এক পিস ছানা ছিল যে Poppins খাবে বলে বায়না ধরে ছিল।      Poppins কিনতে কোণাকুণি রাস্তা পার হতে গিয়ে দেখি রাস্তার একটু কোণ ঘেঁষে একটি জলভর্তি ইয়াব্বড় গর্তের মধ্যে সর্বজয়া ঠ্যাঙ ছড়িয়ে বসে আছে। কি ব্যাপার জিজ্ঞেস করায় বলে কিনা হালকা লেগেছে।      উঠতে সাহায্য করতে গিয়ে দেখলাম অন্য দিক থেকে মস্ত এক ঠোঙ্গা চীনেবাদাম নিয়ে ম দা হনহনিয়ে হেঁটে আসছেন। ওরা নাকি ম দা-র বাড়িই যাচ্ছিল। আমাকেও যেতে বলা হোলো। গেলাম। পোঁছতে না পৌঁছতেই ওরা আকণ্ঠ মদ্যপান শুরু করল। খেতেই থাকল। আমি এক কোণে বসে ব্যাজার মুখে এ বই সে বই-এর পাতা উলটোতে থাকলাম।      সেই অবধি ঠিক ছিল। হঠাৎ সর্বজয়া হাউমাউ করে বলে উঠল ম দা নাকি বান্টু flash করেছেন। আমি ম দা কে হা-রে-রে-রে করে তেড়ে যাওয়ায় উনি আগাগোড়া সব কিছু অস্বীকার করতে থাকলেন। আমি ভাবছি ধরে আচ্ছা সে মাথাটা ঠুকে দেবো, এমন সময় ম দা-র বাড়ির সদর দরজা ভেঙ্গে উপস্থিত হোলো নন্দিতা, হাউলি আর রাজু। ঢুকেই হাউলি আর রাজু গেল ম দা কে চিমটি কাটতে। আমি আর নন্দিত